মো. নাঈমুর রহমান :নোবিপ্রবি প্রতিনিধি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বেড়েই চলছে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ। এতে করে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা করছেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে চলাফেরা, ছাত্রী হলগুলোর সামনে হর্ণ বাজানো এবং মাদকদ্রব্য সেবনসহ নানা অভিযোগ উঠে আসছে।
জানা যায়, সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়নাদ্বীপ এলাকায় প্রক্টরিয়াল বডির নিয়মিত অভিযানে গাঁজাসহ চার বহিরাগতকে আটক করা হয়। আটককৃত চারজনকে পরবর্তীতে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, পূজার ছুটিতে বন্ধ ক্যাম্পাসে শনিবার (১২ অক্টোবর) মোটরসাইকেল নিয়ে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে মূল ফটকে দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যরা তাদের প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে। পরে এক কর্মকর্তার পরিচয়ে তারা প্রবেশ করেন। প্রতিদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর রেফারেন্স দিয়ে অনেক বহিরাগত বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ করেন বলে জানান দায়িত্বরত আনসার সদস্য। অনেক সময় মূল ফটকে পরিচয় জানতে চাইলে তোপের মুখে পড়তে হয় বলেও জানান ওই আনসার সদস্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এণ্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ( টিএইচএম) বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, “বন্ধের মধ্যে আমরা যারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি তারা ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে যারা প্রবেশ করে তারা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। সবচেয়ে উদ্বিগ্নতার কারণ বাইকারদের অনেকে নেশাগ্রস্ত থাকে বেশিরভাগ সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেইট দিয়ে বহিরাগতরা প্রবেশ করে মেইন গেইট দিয়ে বের হয়। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক যাতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এবং বহিরাগতদের পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু হলের এক শিক্ষার্থী বহিরাগতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা (বহিরাগতরা) বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হলের সামনে উচ্চশব্দে এবং বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে যায়। এছাড়াও বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হলের সামনে একত্র হয়ে উচ্চ শব্দে কথোপকথন ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির অভিযোগ করেন নোবিপ্রবির এই শিক্ষার্থী।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে নোবিপ্রবিতে সার্বিক নিরাপত্তায় নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসারের এসিস্ট্যান্ট প্লাটুন কমান্ডার( এপিসি) মো. আয়াছ বলেন, বহিরাগতদের দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে মূল ফটকে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা – কর্মচারীদের আত্নীয়, পরিচিতজন বলে উল্লেখ করেন বহিরাগতরা। সেক্ষেত্রে ওসব শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারী মেইন গেইটে এসে তাদেরকে (বহিরাগতদের)ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে প্রবেশকৃত প্রতিটি মানুষের প্রবেশ এবং প্রস্থান আমরা রেজিষ্ট্রেশন খাতায় এন্ট্রি করে রাখি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবির সহকারী প্রক্টর মামুন মিয়া বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি । বহিরাগতদের দ্বারা সংগঠিত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা দেখলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ৭ অক্টোবর ( সোমবার) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়নাদ্বীপে প্রক্টরিয়াল বডির নিয়মিত অভিযানে ৪জন বহিরাগতকে গাঁজাসহ আটক করে পরবর্তীতে সুধারামপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে কোনো অপ্রীতিকর কিছু পর্যবেক্ষণ করলে প্রক্টরিয়াল বডিকে জানানোর।