লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মুরগির খামারের দুর্গন্ধে ৫০ পরিবারের শিশুসহ ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। ভুক্তভোগীরা উপজেলার দরবেশপুর ইউনিয়নের মধ্য আলীপুর গ্রামের করিম উদ্দিন বেপারী বাড়ির বাসিন্দা। একই বাড়ির জহিরুল ইসলাম ও ওমর ফারুক নামে দুই ভাই পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে জোরপূর্বক বাড়ির ভেতরে খামার গড়ে তোলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বৃদ্ধ-শিশুসহ বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ভুক্তভোগী মোঃ ইসমাইল হোসেন রোববার (২৮ এপ্রিল) মুরগির খামার অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মধ্য আলীপুর গ্রামের করিম উদ্দিন বেপারী বাড়ির মৃত সফি উল্যার তিন ছেলে জহিরুল ইসলাম, কবির হোসেন ও ওমর ফারুক বাড়িতে মুরগির খামার গড়ে উঠেছে। খামারের মুরগির বিষ্ঠার তীব্র গন্ধ দক্ষিণের হাওয়ায় ঘরে ভেসে আসছে। দুর্গন্ধে বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অসুস্থদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছে। এছাড়াও খামারের দুর্গন্ধে বসবাসকারীদের স্বাভাবিক জীবনযাপন, খাওয়া-দাওয়াসহ অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- মোঃ ইসমাইল হোসেন, আব্দুর রহমান, সুমন হোসেন, ইউসুফ হোসেন, আব্দুস সাত্তার, হারুনুর রশিদ, বাজু আহমেদ, মানিক হোসেন, সৈয়দ আহমেদ, হানিফা আক্তার, আব্দুল হান্নান।
তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা পেশিশক্তির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাড়িতে মুরগির খামার চালিয়ে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আমরা চাই খামারটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়া হোক। ভুক্তভোগীরা উপজেলা প্রশাসন, চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন জানান, আমার দুই সন্তান শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মুরগির কড়া গন্ধে ঘরে বসে থাকার উপায় নেই। এদিকে, খামারে মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধে ঘরে বসে খাওয়া দাওয়া করাটাও বড় সমস্যা। এভাবে চলতে থাকলে আমরা অসুস্থ হয়ে মারা যাব।
পরিবেশ আইন মেনে খামার নির্মাণ করেছেন কি না জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা পরিবেশ আইন বুঝিনা। তারা এর পূর্বে খামার করেছে এখন আমরাও করেছি। এদিকে প্রতিদিন পরিষ্কার করলে গন্ধ আর বের হয় না। পরিষ্কার করতে পারিনি কারণ আমার শাশুড়ি গত সপ্তাহে মারা গেছেন। যে কারণে খামারের দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
আরেক অভিযুক্ত ওমর ফারুক মুঠোফোনে উত্তেজিত হয়ে জানান, আমরা পরিবেশের আইন মেনেই খামার করেছি এবং অনুমতিও রয়েছে। তবে অনুমতির কপি আপনাদেরকে দেখাতে আমরা বাধ্য নই। পারলে কিছু করেন।
উপজেলা সেনেটারী অফিসার সাইফুনেচ্ছা বলেন, বাড়িতে মুরগির খামার তৈরি করা জনসাস্থ্যের জন্য হুমকির মুখে। পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। অতএব যে বা যারা এমন আইন অমান্য করছেন আমরা খুব শীগ্রই অভিযান পরিচালনা করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: শারমিন ইসলাম জানান, পরিবেশের আইন মেনে করেছে কিনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।