লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর শহর রাস্তা প্রশস্তকরণে অনিয়ম ঠেকাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিরা। যদিও টিকাদার প্রতিষ্ঠানের তারেক নামের এক ব্যাক্তি বলেছে তারা কাজ করবেনা মেশিনপত্র চলে গেছে। চিঠির মাধ্যমে অফিসকে অবগত করবেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ২ মে রবিবার রাতে পুনরায় রাস্তার কাজ শুরু করে ঠিকাদার । কাজ শুরুর বিষয়টি জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তারেক নামের সেই ব্যক্তির সাথে কথা বললে তিনি জানান নিকোজিশন হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরুর আধা ঘন্টা পরে কাজ পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসন পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীরা। শহরের সামাদের মোড় থেকে জেলা পরিষদের সামনে পর্যন্ত হেঁটে হেঁটে কাজ পরিদর্শন করেন তারা। প্রশাসনের উপস্থিতিতেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কার্পেটিং অনিয়ম দেখা যায়। রোলার চাপানোর পরে যেখানে থাকার কথা 80mm সেখানে 50mmও পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ভিন্ন যুক্তি দেখান। বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থানে আছেন জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান। জেলা প্রশাসকের কঠোর নির্দেশ শতভাগ কাজ করে দেয়ার। নিজ শহরের সঠিক কাজ আদায় করার জন্য কঠোর অবস্থানে আছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাউদ্দিন টিপু। ২০১৮ সালে কাজটি শুরু হয়ে ২০২১ সালের শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের শুরুই করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ। বারবার মেয়াদ বাড়ি অবশেষে ২০২৩ সালে কাজ শুরু করলেও সেখানে রয়েছে ব্যাপক বৈষম্য । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি রাস্তা প্রশস্তকরনে ৩৬ ফুট কথা থাকলেও , সেখানে কোথাও করা হয়েছে ৩১ ফুট আবার কোথাও ৩২, ৩৩, ৩৫ ফুট। এছাড়াও দুই পাশে ৬ ফুট করে ১২ ফুট ড্রেন নির্মাণে স্থানে ৩ ফুট করে ৬ ফুটের কাজ চলমান রেখেছে সড়ক বিভাগ।আঁকা বাঁকা করে ড্রেন নির্মাণে অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। রাস্তা প্রশস্তকরনের সাবগ্রেড ৮০% পাথর ২০ % বালু ধরা থাকলেও ৬০% পাথর ৪০% বালু দিয়ে সাবগ্রেড তৈয়ারি করেন ঠিকাদার। পাথর এবং বালু দিয়ে সাবগ্রেড তৈয়ারী করার ৪৫ দিন শেষ না হইতে ১৫ দিনের মাথায় তড়িগড়ি করে রাতের আঁধারে প্রাইম কোট দিয়ে ৪৮ ঘন্টা না যেতে ৭ ঘন্টা মাথায় কার্পিটিং এর কাজ শুরু করে ঠিকাদার। সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্য মতে অধিগ্রহণসহ এ প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয় ৩০০ কোটি টাকার ওপরে। তার মধ্যে ৩২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা রাস্তা প্রশস্ত করনের জন্য। অভিযোগ ওঠে ইস্টিমেট অনুযায়ী কার্পিটিং করার কথা ৫.২ ইঞ্চি সেখানে করা হচ্ছে ৩-৪ ইঞ্চি। নতুন ড্রেন নির্মাণ না করে পুরাতন ড্রেনের ২০ ফুটের মত নতুন ড্রেনের সংযোজন করে দেয়ারও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ ড্রেন ,গাইড ওয়াল ড্রেন, প্রোটেক্ট পিলার নির্মাণে নিম্ম মানের ইটের কণা-বালু দিয়ে কাজ শেষ করে ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগ । নির্মাণ করার পরই আস্তর উঠে যাচ্ছে। কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশিষ্টজনেরা । নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় প্রকল্পের বোর্ড ব্যবহার করা হয়নি। পথচারী ও যানবাহন চলাচলের নির্মাণ কাজ চলছে নিরাপত্তা জনিত সাইন র্বোড ব্যবহারের চোখে পড়েনি । যার কারনে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয় পথচারীদের। চলমান এ প্রকল্পের নাম লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক।এ প্রকল্পের নির্মান কাজটি পেয়েছেন এম এম বিল্ডার্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড- মেসার্স সালেহ আহমেদ জেবি থেকে নির্মান কাজটি ক্রয় করেন রামগতি কমলনগর থেকে এমপি নির্বাচন করা ইস্কান্দর মির্জা শামীম তিনি আবার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা নামে এলাকায় বেশ পরিচিত। এদিকে ভূমি অধিগ্রহণেও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম, এত বৈষম্য রেখে কেন এই অধিগ্রহণ? জনগনের মনে প্রশ্ন জাগছে।বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসন কর্তৃক লাল দাগ চিহ্নিত স্থানগুলো উচ্ছেদ করা হয়নি । ঠিকাদারী ইসকান্দার মির্জা শামীম বলেন, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়কটির যে নির্মাণ কাজটি চলমান রয়েছে, আমি আমার লোকজনকে নির্দেশ দিয়েছি নির্মাণ কাজটি বন্ধ রাখার জন্য, ১০% লেস দিয়ে প্রকল্পটি আমি নিয়েছি, চলমান নির্মাণ কাজটি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।সহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন নির্মাণ কাজের তদারকি করার কথা থাকলেও প্রাইম কোট দেয়ার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না ।লক্ষ্মীপুর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন বলেন , প্রাইম কোট দেয়ার ৪৮ ঘন্টা পর কার্পিটিং করার কথা! কিন্তু ঠিকাদার যদি না করে থাকে তাহলে কাজটি করা সঠিক হয়নি।এসব অনিয়মের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, নির্মাণ কাজটি কিছু ক্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে, বেশি চাপাচাপি করলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজটি অসমাপ্ত রেখে পালিয়ে যাবে।জুন মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।এ বিষয়ে লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, সিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদার নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। আমরা প্রয়োজনে প্রতিদিনই কাজ পরিদর্শন করবো।